
বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি, উদ্ভাবন প্রচার এবং বাংলাদেশের জন্য একটি টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ অন্বেষণ করতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জেড-আই ফাউন্ডেশন (ZI Foundation) যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত দুইদিন ব্যাপী কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম (CTIF) আয়োজিত হবে ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফোরামটির শুভ উদ্বোধন করবেন এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘কমনওয়েলথ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করবেন।
এ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবনের (বিডা) কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এমপি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কমনওয়েলথে যোগদানের পর থেকে বাংলাদেশ সংগঠনটির একটি সক্রিয় অংশ ছিল। ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম বাংলাদেশকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির এক অসাধারণ সুযোগ করে দেবে।’ এসময়ে তিনি বলেন, CTIF-এর মোট ১২টি সেশনে বাংলাদেশ ও কমনঅয়েলথ-এর বিভিন্ন সদস্য দেশ হতে আগত সরকারি ও বেসরকারি খাতের শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহন করবেন। আজ পর্যন্ত ২৫০ জন বিদেশি অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশে আসছেন, যাদের সংখ্যা খুব শীঘ্রই ৩০০-তে উন্নীত হবে। ১৩ জন বিদেশি মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। কমনঅয়েলথ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগসমূহ ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সেক্টর ভিত্তিক ভাবে সেশন অনুসারে তুলে ধরা হবে।
সালমান এফ রহমান আরো বলেন, বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জনের কথা উল্লেখ করে, উপদেষ্টা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত সাড়ে ১৪ বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
কমনওয়েলথ নেতাদের উচিত বাংলাদেশকে তাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে দেখা-উল্লেখ করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর নির্বাহী চেয়ারম্যান মোঃ লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, ‘আমরা আশা করছি ফোরামটি কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণের চমৎকার সুযোগ করে দেবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিগত বছরগুলোতে পরিবর্তন এসেছে। কারণ, দেশটি থেকে এখন অনেক বেশি তৈরি পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে- যা অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। এই ফোরাম যে সুযোগ দেবে দেশের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ প্রমোশন এজেন্সি হিসেবে বিডা তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া এবং বাংলাদেশের সিডব্লিউইআইসি কৌশলগত উপদেষ্টা জিল্লুর হোসেন।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে কমনওয়েলথের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র- যেমন যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কেনিয়া, রুয়ান্ডা ও মাল্টায় এ ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমনওয়েলথের আওতায় ৫৬টি দেশে ২.৫ বিলিয়ন মানুষ বসবাস করেন যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। কমনওয়েলথ দেশসমূহের সম্মিলিত জিডিপি $১৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি যা ২০২৭ সালের মধ্যে $১৯.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে। কমনওয়েলথের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, বাংলাদেশ বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের নতুন বাজার তৈরি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে কমনওয়েলথের ৩৪তম সদস্য হিসেবে যোগদান করে।