
মাসুদ রানাঃ | বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট
ইভ্যালির বর্তমান পরিচালক রাসেলের স্ত্রী শামীমা নাসরিন
-ফাইল ছবি
পুরোনো হিসাব নাচুকিয়ে আর গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ নামিটিয়ে নতুন করে ব্যবসা চালু করতে যাচ্ছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি । আগামী ১৫ অক্টোবর নতুন সার্ভার থেকে পণ্য বেচাকেনা শুরু করবে তারা।
ইভ্যালির সাবেক এমডি মোহাম্মদ রাসেলের স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিচালক শামীমা নাসরিন বৃহস্পতিবার বিকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন।
পুরোনো গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে শামীমা নাসরিন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল কারাবন্দি থাকায় পুরোনো সার্ভারের পাসওয়ার্ড উদ্ধার করা যাচ্ছে না। সার্ভারের তথ্য ছাড়া পুরোনো গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করাও সম্ভব নয় । রাসেলকে ছাড়া টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়। তাকে ছাড়া পুরোনো সার্ভার সচল করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা বাধ্য হয়েই নতুন সার্ভার থেকে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছি।’
পুরোনো গ্রাহকদের করা অর্ডাকৃত পণ্য ও অপরিশোধিত পণ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো জানান আমাদের গোডাউনে প্রায় ২৫ কোটি টাকার পণ্য রয়েছে। এই পণ্য দিয়ে অতীতের সকল দায় মেটানো প্রায় অসম্ভব, তবে এইটুকু পণ্য দিয়ে যতটা সুষম বন্টন সম্ভব সেই পদ্ধতি অবলম্বন করে পন্যগুলো সার্ভার অন করার সাথে সাথে ডেলিভারি করা হবে। এই পন্য গ্রাহকের তাই গ্রাহকের পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যেই এগুলো ব্যবহার করা হবে। অবশ্যই প্রত্যেকটি সম্মানিত গ্রাহকের অর্ডারকৃত পন্য ডেলিভারি দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ।
এছাড়াও তিনি বলেন পূর্বের অর্ডারকৃত পণ্য আমরা মহামান্য হাইকোর্ট এবং বোর্ডের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করব ।
শামীমা নাসরিন জানান, তারা গ্রেফতার হওয়ার আগে থেকেই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। এ কারণে বাধ্য হয়ে মোহাম্মদ রাসেল একাই সার্ভারের পাসওয়ার্ড সংরক্ষণের দায়িত্ব নেন। একটি কাগজে লিখে অফিসের টেবিলের ড্রয়ারে পাসওয়ার্ডটি রাখা হয়। তাদের গ্রেফতারের পর র্যাব ইভ্যালি অফিসে প্রবেশ করে এবং অফিস অরক্ষিত অবস্থায় রেখেই চলে যায়। এরপর কয়েক দিন অফিসের প্রবেশপথগুলো খোলা ছিল। পরে আর পাসওয়ার্ড তারা পাননি। রাসেলও পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন। তিনি আমাজনের সঙ্গে বসলে পাসওয়ার্ড উদ্ধার করা সম্ভব, অন্যথায় নয়।
ব্যবসায়িক কৌশলে ত্রুটির কথা স্বীকার করে সংবাদ সম্মেলনে শামীমা নাসরিন বলেন, ‘ব্যবসায়িক কৌশলে ত্রুটি সারিয়ে ওঠার জন্য আমরা ছয় মাস সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই আমাদের গ্রেফতার করা হয়। হাইকোর্টে আমরা আবেদন করেছিলাম ব্যবসা পরিচালনার। ভোক্তা সাধারণের কথা চিন্তা করে মুনাফা না করে একটি পণ্যও বিক্রি করব না।’
সংবাদ সম্মেলনে হাইকোর্ট নিযুক্ত ইভ্যালির সাবেক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিভিন্ন বক্তব্য অসত্য বলে দাবি করেন শামীমা নাসরিন।
প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিচালক বলেম, ‘মানিক সাহেব বলেছেন আমরা মানি লন্ডারিং করতাম, প্রতি মাসে দুবাই যেতাম। আমরা মাত্র দুই বার দুবাই গিয়েছি। ইমিগ্রেশনে যোগাযোগ করলেই এটা জানা যাবে। ইভ্যালির সামগ্রিক তথ্য হয় তিনি বুঝতে পারেননি, নয়তো তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে অসত্য বলেছেন।’
উল্লেখ্য, গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ রাসেল ও শামীমা নাসরিন গ্রেফতার হন। চলতি বছর এপ্রিলে জামিনে মুক্তি পান শামীমা নাসরিন। তবে এখনো কারাবন্দি রয়েছেন মোহাম্মদ রাসেল।
Posted ৬:৩৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২২
dhakanewsexpress.com | Masud Rana