মুক্তিযুদ্ধ ৭১ নিউজ, নিজস্ব প্রতিবেদক : ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদী তীরবর্তী মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী, বালুচর ও বাসাইল ইউনিয়ন। এ তিন ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বুকচিরে বহমান দুই নদী। ইউনিয়নে রয়েছে, অসংখ্য আঁকাবাঁকা খাল-বিল ও চাষাবাদ যোগ্য ত্রিফসলি (বছরে তিনটি ফসল হয়) কৃষি জমি। এসব চরাঞ্চলের রয়েছে অসংখ্য স্কুল ও মাদ্রাসা। যা অনগ্রসর চরাঞ্চলের জনগণকে শিক্ষিত করছে।
দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি, প্রশাসন ও অসাধু ব্যবসায়িদের যোগসাজসে ত্রিফসলি জমির মাটি কেটে ও বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। পরিবেশ রক্ষা করতে তিন ইউনিয়নের বাসিন্দারা যৌথভােব জেলার ভূমি, কৃষি ও পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
বিক্রমপুরের মাটি সোনার চেয়ে খাঁটি। সোনাফলা এই উর্বর জমিতে ধারাবাহিকভাবে (ধাণ, আলু, রবিশস্য) চাষাবাদ করা হয়। যা স্থানীয় খাদ্যের যোগান দিয়েও জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই চর এলাকার বালুচর ইউনিয়নের কালীনগর, খাসনাগর,খাসমহল বালুচর, মোল্লাকান্দি, লতব্দী ইউনিয়নের কংসুপুরা,নয়াগাঁও, রামকৃষ্ণন্দী, পূর্ব রামকৃষ্ণন্দী, খিদিরপুর এবং বাশাইল ইউনিয়নের পাথরঘাটা, ঘুয়াখোলা গ্ৰামে হাজার হাজার একর ত্রিফসলী জমির মাটি অবৈধভাবে কেটে নিয়ে এবং ১৫০-২০০ ফুট গভীরে বালু উত্তোলন করে গভীর মৃত্যুকূপে পরিণত করছে। এ সমস্ত অপকর্মে প্রধান ভূমিকা পালন করছে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি,
অসাধু ব্যবসায়ী, প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ । অপকর্মের সুবিধাস্বার্থে অত্র এলাকার যুব সমাজকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য, ইয়াবা এবং নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে কিশোরগ্যাং ও স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলে। এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তুলেছে। যার ফলে, স্থানীয় কৃষকদের ও জনগণের আবাদী জমি এবং বসতীবাড়ি হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে । মাটি কাটা ও বালি উত্তোলনে যে দানব যানবাহনটি ব্যবহার করা হয় তা জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। এসব দূষণের ফলে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, বৃদ্ধ, রোগীদের অবনর্নীয় কষ্ট হয় । প্রায়ই নানা ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয় এমনকি মৃত্যুও হয় ।
এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে অত্র ইউনিয়নগুলোর প্রতিটি নাগরিক, কিছু উদ্যোমী সংগঠনের সদস্যরা স্ব-উদ্যোগে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ গণ সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আমাদের এই আবেদন প্রেরণ ।
ইতিপূর্বে এলাকার জমির মালিকগণ, কৃষক এবং সচেতন ব্যক্তিবর্গ মাটি কাটার বিরুদ্ধে সরাসরি বাঁধা প্রদান, প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন করা হয়। এতে এই মাটি কাটা চক্রের সদস্যরা প্রকাশ্য দিবালোকে প্রতিবাদকারী ব্যক্তিদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন । স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার অবহিত করা হলেও কোন প্রতিকার মেলে নি ।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের কৃষক বাঁচলেই দেশ বাঁচবে, দেশের মানুষ বাঁচবে। তাই আমরা এদেশ দেশের মাটি ও মানুষকে বাঁচাতে নিরুপায় হয়ে আপনার সাহায্য কামনা করছি।
দেশ ও জাতি রক্ষার্থে উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো গুরুত্বসহ বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্থানীয় প্রশাসনের নিকট আবেদন জানান।