Recent News
টিপু হত্যায় নতুন মোড়, গোয়েন্দা নজরদারিতে তারেক সাঈদ!

মতিঝিলের আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার ঘটনায় গ্রেফকৃতদের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং ভয়ংকর তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। মতিঝিলে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারে এই হত্যাকাণ্ড ঘটলেও রিমান্ডে নতুন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৫) হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কাজ করেছে মতিঝিলের রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী একাধিক গ্রুপ। আন্ডারওয়ার্ল্ডের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। টিপু খুনের রহস্য উন্মোচন শুরু হলে গ্রেফতার এড়াতে ক্ষমতাসীন দল ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে তদবির শুরু করেন প্রভাবশালীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল শাহরিয়ার ওরফে শটগান সোহেল ও ৯ নং ওয়ার্ড যুবলিগের সভাপতি মারুফ রেজা সাগর গ্রেফতা হওয়ার পর থেকেই এই হত্যাকান্ডের নতুন মোড় নিয়েছে। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ক্রীড়া ভবনের ১৪০ কোটি টাকার টেন্ডার কেন্দ্র করেই মূলত এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারপ্লান করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদ ও জাহিদুল হক টিপু ক্রীড়া ভবনে টেন্ডারবাজিতে একত্র হয়ে কাজ করতেন। এদিকে ক্রীড়া ভবনের ১৪০ কোটি টাকার টেন্ডার প্রতিক্রিয়ায় কমিশনের পুরো টাকাই টিপু একাই ভোগ করেন এবং কাউকে এই টাকার ভাগ না দেওয়ায় মতিঝিলের আন্ডারওয়ার্ল্ড ও যুবলীগ নেতা সোহেল শাহরিয়ার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদ মিলে প্রথমে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরবর্তী এরাই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি টিম গঠন করেন। পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বেশিরভাগ পাকড়াও হলেও ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদ।

এদিকে,কিলিং মিশনের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদের ক্যাশিয়ার মারুফ খান গ্রেফতার হয়েছে। কিলিং মিশনে তারেক সাঈদ জড়িত ছিল বলে তিনি স্বীকার করেছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া গেছে।
গ্রেফতারকৃত মারুফ খান মূলত ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদের ‘ক্যাশিয়ার’ হিসেবে কাজ করে। সে মতিঝিল ও শাহজাহানপুর এলাকার চাঁদাবাজির অর্থ তারেক সাঈদের কাছে পৌঁছে দেয়। এছাড়াও ঠিকাদারি ও ইজারা চাঁদাবাজিসহ নানা বিষয়ে তারেক সাঈদের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ করতেন । এজন্য স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে সাঈদের ক্যাশিয়ার হিসেবে চিনে।

অন্যদিকে, গত ৯ জুন ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় মুসাকে। পরদিন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত ডিবি পুলিশের রিমান্ডে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে মুসা। তাতে রয়েছে কবে, কোথায় হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে এবং কারা টিপু হত্যার সুযোগ নিতে চেয়েছে, কার কি ভূমিকা ছিল এসবের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যাদের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছে।
ডিবির তদন্তকারী টিমের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ছয় দিনের রিমান্ডে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে মুসা।

এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ড থেকে বাচঁতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদ গুরুত্বপূর্ণ এক আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় গিয়েও নিয়মিত ধরনা দিচ্ছে।

জানা যায়,আন্ডারওয়ার্ল্ডের দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। টিপু খুনের রহস্য উন্মোচন শুরু হলে গ্রেফতার এড়াতে ক্ষমতাসীন দল ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে তদবির শুরু করেন তারা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রিফাত রহমান শামীম বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মতিঝিলকেন্দ্রিক আন্ডারওয়ার্ল্ডের একটি যোগসূত্র পাওয়া গেছে। ঠিকাদারি ও ইজারাসহ নানা বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে টিপুর সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল কারও কারও। বৃহত্তর মতিঝিলের একক নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছিল কোনো কোনো গ্রুপ। এর জের ধরেই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘ মুসা ছয় দিনের রিমান্ডে মুসা যেসব তথ্য দিয়েছে সেগুলো আরও গভীরভাবে নিশ্চিত হতে তাকে আবারও চার দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছিল। এই রিমান্ডে সে যেসব ব্যক্তির তথ্য দিয়েছেন তাদেরকেও মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এছাড়া বেশ কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির তথ্য সে দিয়েছে।’

জিজ্ঞাসাবাদে মুসা যাদের নাম বলেছে তারা কিলিং মিশনে যুক্ত কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ‘এটিকে কিলিং মিশন বলবো না। যাদের নাম বলেছে তাদের আমরা নজরদারিতে রেখেছি। যে কোনো সময় তদন্তের স্বার্থে তাদের আটক করে মুসার মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

News Reporter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *