Recent News
‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গানের সুর বিকৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন কাজী ছাব্বীর

জাতীয় সাহিত্য অধিদপ্তর বাস্তবায়ন পরিষদ এর প্রধান সমন্বয়ক – ঔপন্যাসিক, কবি ও কলামিস্ট কাজী ছাব্বীর  লিখিত এক প্রতিবাদ লিপিতে জানান, ১৯২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর, ধুমকেতু’তে আনন্দময়ী’র আগমনে কবিতা প্রকাশের পর  পত্রিকাটি  রাজ-রোষাণলে  পতিত হয়। ধুমকেতু’র অফিসে পুলিশ হানা দেয় এবং বিদ্রোহী  কবিকে গ্রেফতার করা হয়।

স্বৈরশাসকের বিচারে  বিদ্রোহী কবিকে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় ।কবি’র  কারাবাসের প্রথম কিছুদিন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়।  এরপর হুগলী জেলে বদলি করা হয়।  কারান্তরে  অত্যাচার, নির্যাতন  ও  অবিচার  এর বিরুদ্ধে কবি’র  এই বিখ্যাত গান রচনা করেন।

“কারার ঐ লৌহকপাট
ভেঙে  ফেল কর রে লোপাট
রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী”

এই গান গণজাগরণের গান, দেশপ্রেমের গান, চেতনাবোধ’র গান। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে বলিউডে তৈরি হিন্দি ছবি “পিপ্পা”তে ব্যবহৃত হয়েছে  কাজী নজরুল ইসলামের “কারার ঐ লৌহকপাট” গানটি।  এ গানে  রিমেকের সুর দেন   ভারতীয়  সংগীতশিল্পী এ আর রহমান। কিন্তু সেই গানের সুর বিকৃত করে এ আর রহমান তাঁর  ইচ্ছেমতো সুর আরোপ করায় বাংলা ভাষাভাষীদের হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ  হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তরুণ  এই ঔপন্যাসিক কবি ও কলামিস্ট  কাজী ছাব্বীর।

তিনি আরও  জানান যে, সম্প্রতি এ .আর. রহমান, পিপ্পা সিনেমাতে এই গানের  সুর বিকৃতি করে,  ইচ্ছেমতো  সুর প্রয়োগ করে জঘন্যতম অপরাধ করেছেন বলে আমি মনে করি।  তিনি এই গানের  মর্মার্থ বোঝেননি।

বিদ্রোহী কবি’র এই মহান সৃষ্টি  ধ্বংস করার নিন্দনীয়  অপপ্রয়াসমূলক  অপরাধকে জাতীয় সাহিত্য অধিদপ্তর বাস্তবায়ন পরিষদ কর্তৃক  ধিক্কার এবং তীব্র  প্রতিবাদ  জানাই। এই গানে বাঙালির যে আবেগ রয়েছে, সুর বিকৃতির মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষীদের আবেগকে এ আর রহমান  হত্যা করেছেন।

জাতীয় সাহিত্য অধিদপ্তর বাস্তবায়ন পরিষদ তার  ন্যায় বিচার দাবি করছি। সাম্যের কবি, দ্রোহের কবি, প্রেমের কবি, বিদ্রোহী কবি’র  সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব সমগ্র বাংলা ভাষাভাষীদের।

এই মুহূর্তে গানটি সিনেমা থেকে তুলে নেওয়ার দাবি জানান কাজী ছাব্বীর। আর যদি তা তুলে নেওয়া না হয়, তাহলে সঠিক সুরে প্রয়োগ করার আহবান  জানান তিনি।

<strong>”শ্রদ্ধাভরে নজরুল স্মরণে”  বহুমাত্রিক লেখক কাজী ছাব্বীর এর  স্বরচিত  কবিতা:-</strong>

“নজরুল স্মরণে”
— কাজী ছাব্বীর

বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভার নাম
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে
রয়েছে তোমার অসামান্য অবদান,
ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা ও পরাধিনতার বিরুদ্ধে ছিল,
তোমার কঠোর অবস্থান।
সেইতো তুমি বনে গেলে বিদ্রোহী কবি হিসেবে,
প্রতিটি বাঙালির চিত্ত গভীরে তোমার স্থান।

হে নজরুল…
জন্মেছিলে পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়ায়, তুমি বাংলার বুলবুল।
তুমি বিদ্রোহী… তুমিই ভালোবাসার কবি।

শিশুকালে হারিয়ে বাবা, পরেছিলে অনটনে,
দারিদ্রতা তোমায় ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি,
প্রতিভা বিকশিত করেছ তুমি কাজের ফাঁকে,
দুখুমিয়া নামে দুই বাংলা জানে তোমায়,
লিখেছিলে দুঃখের কবিতা।

লজ্জা সরমের বালাই ছিলনা তোমার,
দেখিয়েছিলে কাজের সততা।
পাতলা চামড়ার শোষকগোষ্ঠী,
সহ্য করতে পারেনি তোমার দেশপ্রেম।
জেলে পোড়ে, শত কষ্ট দিয়ে কি,
দুখু মিয়ার দেশপ্রেম রুখা যায়।

“কারার ঐ লৌহকপাট
ভেঙে ফেল কর রে লোপাট
রক্ত-জমাট শিকল-পূজোর পাষাণ-বেদী।”
“লাথি মার ভাঙরে তালা,
যত সব বন্দিশালা
“আগুন জ্বালা,আগুন জ্বালা।”

এমন আরো শত হাজারো কবিতায় তোমার দেশপ্রেম,
আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে দ্রোহ প্রকাশ পেয়েছে,
তুমি দুখু মিয়া থেকে বিদ্রোহী কবি,
দুই বাংলার মানুষের হৃদয় স্পন্দনে স্বীকৃত।

তুমি মানবতা, দ্রোহ আর সাম্যের কবি,
তোমার চরণে লক্ষ কোটি শ্রদ্ধা ভক্তি,
হে বিদ্রোহী কবি…

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বাঙালি জনপ্রিয় তুমি,
হে বিদ্রোহী কবি।
বাংলা কাব্যে অগ্রগামী, পশ্চিমবঙ্গে জন্ম নেওয়া,
হে নজরুল…
তুমি বাংলা ভাষার অন্যতম সাহিত্যিক,
তুমিই দেশপ্রেমিক জাতীয় কবি।

কবিতা, সংগীত, ছোটদের গল্প, উপন্যাস,
নাটক,আর প্রবন্ধে তুমিই অগ্রপথিক।

হে নজরুল তুমি ই
বাঙালির হৃদয়ে আছ মিশে,
থাকবে জনম জনম ভরে।

তোমার সুকীর্তিতে তুমি মহিয়ান, চির অমর,
মানব প্রেমের অমর কাব্যের চারণ, জাগরণের কবি তুমি।

News Reporter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *